বিলিয়ন ডলারের বিজনেস প্রতিষ্ঠানগুলো যখন সেলস নিয়ে খুব স্ট্রাগল করে, তখন তারা কি করে?
ভেবেছেন কখনও?
গ্রামীন ফোনের সিইও একটা সেলস টিপস শেয়ার করেছেন, ভিডিওটা আগে দেখে নিন। আমি ভিডিওটা দেখে অনেক কিছু শিক্ষা নিয়েছি। আমার শিক্ষাগুলো শেয়ার করতে ভিডিওতে কিছুটা কাস্টমাইজ করেছি।
মূল লিখাটা পড়ার আগে, চলুন ভিডিওটা আগে দেখি।
নাকি আপনি ভেবে নিয়েছেন, বিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠানগুলো কখনও সেলস নিয়ে বিপদেই পড়েনা?
তারা সেলস নিয়ে বিপদে পড়লে, সেটাকে কিভাবে ঠিক ট্র্যাকে নিয়ে আসা যায়, তার জন্য উদ্যোগ নিতে গিয়ে কাস্টমারদের সাথেই কানেকশন বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে। অর্থাৎ ইংরেজিতে কাস্টমারকে সর্বোচ্চ প্রয়োরিটি দেওয়া অর্থে যেই মেসেজটা ব্যবহৃত হয়, কাস্টমার ইজ গড (এখানে গড মানে খোদা না, সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি প্রাপ্ত ব্যক্তি অর্থে বুঝাচ্ছে), সেটা যারা যত বেশি মেনে চলতে পারে, তারাই বিজনেসকে তত বড় পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। তাই বড় বিজনেস প্রতিষ্ঠানগুলো বড় হয়ে গেলেও কাস্টমারদের সাথেই সেলসম্যানের বাহিরেও আলাদা কানেকশন তৈরির জন্য কার্যক্রম কনটিনিউ রাখে।
কিন্তু যারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, সেলস নিয়ে পেরেশানী মুহুর্তে সরাসরি কাস্টমারের সাথে কানেকশনটা তৈরি না করে ব্রীজ হিসেবে পীরের কাছে যেয়ে থাকি। কথা কি ঠিক , নাকি ভুল আছে।
এ পোস্টের সাথে গ্রামীন ফোনের সিইওর একটা ভিডিওটা শেয়ার করেছি, ভালোভাবে দেখেছেন, আশা করছি।
এ ভিডিওতে গ্রামীন ফোনের মত বাংলাদেশের এত বড় একটা কোম্পানীর সিইও , উনার কাছ থেকেই শুনুন, যখন তারা সমস্যাতে পড়ে, সেটা সমাধানের জন্য চেষ্টা করে, তখন তারা কি করে, সেটা উনি নিজেই ভিডিওতে বলেছেন, দেখে নিন।
ভিডিওতে ৩টা পয়েন্টকে মার্ক করে দিয়েছি।
১) আমার যখনই কোন পরিবর্তনের কথা মনে হয়েছে, কিংবা সমস্যার সমাধান খুজতে হয়েছে, আমি পথে বেরিয়ে পড়েছি।
সেলস বৃদ্ধির জন্য কোন পরিকল্পনা নেওয়ার উদ্যোগ নিলে, সেটা কিভাবে মার্কেটিং করলে কাজ করবে, সেই উদ্যোগটাকে ফলপ্রসু করতে হলে কি করতে হবে, কিংবা পরিকল্পনাটা সফল হবে কিনা, এই উত্তরগুলো খুজতে কারও কাছ থেকে গাইড নিতে গিয়ে ডিরেক্ট উনি পথে নেমে গিয়ে অডিয়েন্স, যারা গ্রামীনের কাস্টমার কিংবা যারা কাস্টমার না তাদের সবার সাথে কথা বলতে, তাদের সাথে নেটওয়ার্কিং তৈরি করার কাজটাকেই সবচাইতে ফলপূসু ইনভেস্টমেন্ট মনে করেন।
২) বোর্ড রুমের হাজারো আলাপে যে সমস্যার সমাধান আমরা করতে পারিনা, একজন সহকর্মীর সাথে চায়ের আড্ডাতে সে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
বোর্ড রুমে বসে মিটিং করছে গ্রামীন ফোনের টপ সব কর্মকর্তা, যারা বিজনেসের জায়েন্ট পারসন, যারা এত বছর বিজনেস করে কিভাবে কাস্টমার বানাতে হয়, সেই ব্যপারে সিদ্ধহস্ত, তারাও যখন খুবই খারাপ অবস্থাতে পড়েন, বোর্ড রুমে বসেই সকল সমস্যার সমাধান খুজে বের করতে পারেন না। তখনই তারা সমাধান খুজতে নেটওয়ার্কিং শুরু করেন একদম কাস্টমারদের সাথে। এখানে সহকর্মী বলতে, গ্রামীন ফোনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং গ্রামীন নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারী কাস্টমার উভয়কেই উনি বুঝিয়েছেন।
৩) পথে না নামলে জানবো কি করে, দুনিয়া কোন দিকে যাচ্ছে? আমি হয়তো টেলিকম বুঝি, কিন্তু কাস্টমারের মন বুঝাটাও জরুরী।
আপনি বিজনেস কোচের সাথে আড্ডাতে বসে সমাধান খুজতে পারেন, কিংবা নিজের টীমের এক্সপার্টরা বসেও অভিজ্ঞ টিমের থেকেও আইডিয়া নিতে পারেন, কিন্তু সেটা কাস্টমারের সাইকোলজির যে চেঞ্জ সেই বিষয়ে আপনাকে টোটাললি অন্ধকারে রাখবে। আর কাস্টমারের সাইকোলজি আপডেটগুলো বুঝতে না পারলে বড় বড় প্লান করে বাস্তবিকভাবে সফল হওয়া সম্ভব নয়।
গ্রামীন ফোনের সিইওর এর এই ক্ষুদ্র ভিডিও থেকে উদ্যোক্তাদের জন্য শিক্ষা:
বিজনেস বুঝার ক্ষেত্রে আপনি , কিংবা আপনার টিম কিংবা আপনার বিজনেস খুব অভিজ্ঞ হলেও, কাস্টমারের মন বুঝাটাও অনেক জরুরী। তাই সেই রকম অবস্থাতে কাস্টমারদের নিয়ে ট্যুর দেন, ঘুরতে বের হোন, কোন এলাকাতে গেলে কাস্টমারদের সাথে আড্ডা দিন। নতুন নতুন কাস্টমারদের সাথে নেটওয়ার্কিং করেন, এখান থেকে কাস্টমারদের সাইকোলজি বুঝতে পারবেন, বিজনেসের জন্য, কনটেন্টের জন্য চমৎকার টপিকস পেয়ে যাবেন, যা অ্যাডসের কনভার্সন খরচ অনেক কমিয়ে দিবে। উদ্যোক্তা- উদ্যোক্তা, কিংবা উদ্যোক্তা- বিজনেস কোচ নেটওয়ার্কিং এর চাইতে উদ্যোক্তা- কাস্টমার নেটওয়ার্কিংটা অনেক বেশি লাভজনক।
আপনাকে এবার প্রশ্ন করেনতো, কাস্টমারদের সাথে কত ঘন্টা এরকম সময় ব্যয় করেছেন? আপনার সেলস ড্রপ করলে আপনি কার কাছে ছুটে যান? কাস্টমারের সাথে নেটওয়ার্কিং করার জন্য আপনার কি কি কার্যক্রম থেকে প্রতি মাসে।
কোন বিজনেসের কোচের সাথে দেখা করার সুযোগের জন্য আফসোস করা বন্ধ করে দিয়ে, কাস্টমারের সাথে দেখা করার , ঘুরার, আড্ডার দেওয়ার সুযোগটার জন্য মনের ভিতর পেরেশানী বানিয়ে নিন, তবেই আপনাকে কেউ ঠেকাতে পারবেনা, ঠকাতেও পারবেনা