বিজনেস সব রেডি হয়ে যাওয়া পর এবার ব্রান্ডিং ও মার্কেটিং শুরু করতে হবে। এ অধ্যায়টি শুরুর আগে নিচের লেখাটি পড়ে নিতে পারেন, ব্রান্ডিং বিষয়টা ক্লিয়ার হবে এটা পড়ে।
মার্কেটিং এবং ব্রান্ডিং ১টা উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া সহজ হবে সবার জন্য।
মার্কেটিং: আমি ফেসবুক মার্কেটিং কোর্স করাচ্ছি, এটা দিয়ে সবজায়গাতে প্রচার করলে স্টডেন্ট পেতাম। সেটাকে বলতো মার্কেটিং। প্রতিটা কোর্সের আগে আবার একই পরিশ্রম করে মার্কেটিং করতে হতো।
ব্রান্ডিং: যখন এ কোর্সটার ব্রান্ডিং পরিকল্পনা করলাম, তখন কয়েকটি বিষয় পরিকল্পনাতে নিয়ে আসলাম।
- – পুরো ট্রেনিংটাকে নতুন সিস্টেমে নিয়ে আসলাম, রেকর্ডিং কোর্স সিস্টেম (যদিও এটা নতুন সিস্টেম না)
- – কোর্সের একটা নাম ঠিক করলাম, নাম দিলাম, কনটেন্ট কিং
- – কোর্সের নামের উপর ভিত্তি করে লোগো রেডি করলাম।
- – লোগোকে আবার অ্যানিমেটেড লোগো করলাম।
- – প্রতিটা স্টেপে সবার সাথে ঘটনাগুলো শেয়ার করলাম।
- – কোর্সের একটা স্লোগান ঠিক করলাম। স্লোগান: হতে হলে বিজনেস কিং, হতে হবে কনটেন্ট কিং।
- – তারপর যারা কোর্সটি কিনলো ,তাদের সবার প্রোফাইলকে লোগোর সবুজ আর হলুদ রং দিয়ে রাঙ্গিয়ে দিলাম।
এবার পুরো একটা থিম বেইসড মার্কেটিং শুরু করলাম। পুরো ব্রান্ডিং প্রসেসের কেস স্টাডি কোর্সে একটা প্রজেক্টের ব্রান্ডিংয়ে কি কি ঘটে, সব নিয়ে ক্লাশে যুক্ত করেছি। এখানে অতি সংক্ষিপ্ত আকারে শেয়ার করলাম।
এটাই হচ্ছে ব্রান্ডিং পরিকল্পনা। ১ম ধাপের পরিকল্পনা সেটা ছিলো। এখন অন্য স্টেজে, তাই এখন অন্য থিমে ব্রান্ডিং করতেছি।
এ ধাপের ব্রান্ডিংয়ের জন্য নতুন স্লোগান ঠিক করেছি।
স্লোগান:
জাল হাদিসে জান্নাত বরবাদ
জাল টিপসে ব্রান্ডিং ধুলিৎসাৎ।
এ স্লোগান মাথাতে রেখেই সকল কনটেন্ট প্রস্তুত করছি। এটাই হচ্ছে ব্রান্ডিং।
এখন কনটেন্ট কিং কোর্সকে কি পরিমান মানুষজন চিনে সেটা আমি খুব ভালোভাবে চিনি। এখনও দেখবেন, আমি সারাদিন প্রচার করিনা।
ব্রান্ডিং না করে অতিরিক্ত মার্কেটিং বা এগ্রেসিভ মার্কেটিংয়ের ভয়ংকর খারাপ দিকটা কি?
মার্কেটিং খারাপ জিনিস না। শুধু সমস্যা হচ্ছে সারাজীবন পরিশ্রম এটাতে। এবং একটা পযায়ে মার্কেটিংয়েও মানুষ নজর কাড়া সম্ভব হবেনা , তখন পরিশ্রম আরো বাড়াতে হবে। আর তখন শুরু হয় এগ্রেসিভ মার্কেটিং।
আর এগ্রেসিভ মার্কেটিংয়ের বিপদজনক দিক নিয়ে একটা ছোট্ট গল্প বলি।
২০১৫-২০১৬ সালের দিকে এগ্রেসিভ মার্কেটারদের জ্বালাতে গুগলে কিংবা ইউটিউবে কোন ভালো কনটেন্টকে Ranking করা সম্ভব হচ্ছিলনা। কম গুরুত্বপূর্ণ রিসোর্সফুল কনটেন্ট অতিরিক্ত মার্কেটিংয়ের কারনে সামনে চলে আসতেছিলো। কিন্তু যারা ভালো কনটেন্ট তৈরি করে, সেটাতে মনোযোগ দেয় দেখে, এগ্রেসিভ মার্কেটিং স্বাভাবিকভাবে তাদের পক্ষে করা সম্ভব হয়না। একটা পযায়ে ইউটিউবে মা, নারী কিংবা মেয়ে এটা দিয়ে সার্চ দিলেই নুড কিংবা অশ্লীল ভিডিও সামনে চলে আসতো। অন্য সব কিছু মানা গেছে, যখন এ পবিত্র শব্দ দিয়ে এ ঘটনা ঘটলো, তখন সব মার্কেটাররা একসাথে উদ্যোগ নিলাম। অশ্লীল যে ভিডিওগুলো rank এ আসে, সবাই মিলে রিপোর্ট করে সেগুলোকে ডাউন করাইয়া দিতে হবে। তার বিপরীতে মা শব্দ দিয়ে সার্চ দিলে যাতে ভাল ভিডিও আছে, সেগুলোকে Rank করাতে হবে। ৬মাস সবাই মিলে চেষ্টা করে সেগুলো ঠিক করলাম। ইউটিউব ও গুগল অ্যালগরিদম আপডেট করে ভালো কনটেন্টকে সামনে নিয়ে আসা শুরু করলো একটা পযায়ে।
তাই অতিরিক্ত মার্কেটিংয়ে নজর দিলে আনহেল্ডি পরিবেশ তৈরি হয়ে যায়, তাতে ভাল যারা কাজ করে, তাদের জন্য টিকে থাকা কঠিন হয়। তাই অতিরিক্ত মার্কেটিং কমিয়ে healthy ব্রান্ডিং করাটা উচিত। ফেসবুকের কিছু দুর্বলতার একটা হচ্ছে সেই ইউটিউবের ranking করার মত। যেটা কোন পোস্টে নিজেরা সবাই মিলে কমেন্ট করে সেটাকে টপে নিয়ে আসা। সেটার অনেক বাজে ব্যবহার মার্কেটাররা করছিলো।
এটা ঠেকানোর জন্য ফেসবুক এখন ব্যবস্থা নিয়েছে। এটা করলে উল্টো পেইজে কিংবা প্রোফাইলকে ফেসবুক নেগেটিভ মার্ক করে ফেলে। যদি কোন পোস্টে এভাবে rank করাইয়া ফেলে, কিন্তু অন্য কেউ সে পোস্টে ঢুকছেনা, তাহলে ফেসবুক সেটাকে মার্ক করে। আবার সেই প্রোফাইলের কিংবা কোন পেইজের সব পোস্টে যদি ঘুরেফিরে একই ব্যক্তিরাই কমেন্ট শেয়ার করতে থাকে, তাহলেও নেগেটিভ মার্কিং করে, এবং স্থায়ীভাবে তাদের পোস্ট রিচ কমিয়ে দেয়।
অতিরিক্ত মার্কেটিংয়ের বিপদজনক দিকটাও শেয়ার করলাম। এন্টিবায়োটিক খাওয়ার সময় তার ক্ষতিকর দিকটা জেনে খাওয়া উচিত
সবাই যখন ৯৫% অ্যাফোর্ড দিচ্ছেন পোস্টকে প্রমোশন করার জন্য, আর ৫% অ্যাফোর্ড দিচ্ছেন কনটেন্ট তৈরির জন্য, তখনই আনহেল্ডি প্রতিযোগীতা শুরু হয়ে যায়। যেটা সবার জন্য অমঙ্গল। হওয়া উচিত, ৯৫% অ্যাফোর্ড দিবেন কনটেন্ট তৈরির জন্য। এবার যে কনটেন্ট তৈরি হবে, সেটাকে অনেকের কাছে ছড়িয়ে দিতে ৫% অ্যাফোর্ড দিবেন। আর এটা করতে গেলেই আপনাকে ব্রান্ডিং পরিকল্পনা করতে হবে।