কপিরাইট কী?
মৌলিক সৃষ্টিকর্মের মালিকানা বা সত্ত্বাধিকারী নিশ্চিত করাই হচ্ছে কপিরাইট।সাহিত্য বা যেকোনো লেখা, শিল্পকর্ম, সংগীত, চলচ্চিত্র, স্থাপত্য, আলোকচিত্র, ভাস্কর্য, লেকচার, কম্পিউটার প্রোগ্রাম, নকশা অর্থাৎ যা কিছু মৌলিকভাবে তৈরি করা হবে, সবকিছুই কপিরাইটের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।আপনার কোন আইডিয়া কিংবা বিশেষ লেখা কপিরাইটের অন্তুর্ভুক্ত হতে পারে।কপিরাইট থাকলে বিনা অনুমতিতে সেগুলো ব্যবহার, পুনর্মুদ্রণ, অনুবাদ, প্রকাশ ইত্যাদি করা হলে এই আইনের আওতায় শাস্তি ও জরিমানা হতে পারে।
ধরেন, অনেক কষ্ট করে একটি বই লিখে বাজারে ছাড়লেন। বইটি বাজারে বেশ ভালো ব্যবসা করছে। সবাই আপনার লিখা নিয়ে বেশ আলোচনাও করছে। কিন্তু হটাৎ করে একদিন দেখলেন আপনার একই লিখা অন্য একটি নামে বা অন্য কোন বইয়ের নাম দিয়ে বাজারে ছারা হল। এখন কি করবেন আপনি? নিশ্চয়ই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাইবেন, কিন্তু কিভাবে? আপনার বইটি যখন বাজারে ছেরেছিলেন তখন কি কপিরাইট করেছিলেন? যদি না করে থাকেন তাহলে আপনার বই কপি করেছে, সেটা যতই চিৎকার করেন, কোন লাভ নাই।
আমি চাইলেই কি আমার মৌলিক কর্মের নকলকারীর বিরুদ্ধে কপিরাইট লংঘনের মামলা করতে পারি?
বাংলাদেশেও কোন ব্যক্তি যদি কপিরাইট দপ্তরে আবেদন করে নিজের স্বত্বাধিকার তালিকাভুক্ত করতে হবে, তাহলেই ভবিষ্যতে কপিরাইট দাবি করা যাবে। বাংলাদেশের রেজিস্টার অফ কপিরাইটস জাফর আর চৌধুরী বলছেন, এই আইনে প্রতিকার পেতে হলে তাকে মেধা সম্পদটির অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন থাকতে হবে।কয়েক বছর আগে আয়নাবাজি নামের একটি চলচ্চিত্রের ব্যাপক পাইরেসির উদাহরণ টেনে মি. চৌধুরী বলছেন, ” ফলে এমন হয়েছে যে, যখন তার পণ্যটি কেউ নকল করছেন বা পাইরেসি হচ্ছে, তখন তিনি আমাদের কাছে আসলেও করার কিছু থাকে না। কারণ যেটির রাইট তার প্রমাণিত হয়নি, সেখানে আমরা কি করতে পারি?”জাফর আর চৌধুরী বলছেন, ”কেউ যদি আমাদের কাছে অভিযোগ করেন যে, তার সম্পদটির পাইরেসি বা নকল হচ্ছে, তাকে তো আগে সেটির মালিকানা প্রমাণ করতে হবে। কিন্তু যদি কপিরাইট না থাকে, আমরা কিভাবে বুঝবো যে, তিনি সেটার মালিক নাকি অন্য কেউ?”
বাংলাদেশের কপিরাইট আইন
বাংলাদেশে কপিরাইট আইন প্রথম তৈরি হয় ১৯৭৪ সালে। কিন্তু এরপর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সিডি, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ইত্যাদির কারণে সৃষ্টিশীলতা ও কপিরাইট ধারণারও বদল হয়েছে।পরবর্তীতে ২০০০ সালে নতুন একটি কপিরাইট আইন করা হয়, যা পরে ২০০৫ সালে সংশোধন হয়।বাংলাদেশে কপিরাইট আইন লঙ্ঘনে কি ধরনের শাস্তি আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “চলচ্চিত্র বাদে চারটি ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চার বছরের জেল ও দু লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান আছে। চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে শাস্তির পরিমাণ পাঁচ বছরের জেল”।কপিরাইট নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে আইনমন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর্টিকেল লিখা আছে, সেটি দেখে পড়ে বিস্তারিত যা জানার জেনে নিতে পারেন।
1 Comment
Ismail Arman
April 12, 2022সুন্দর একটি তথ্য শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।