সেলস ফানেল কী?
একটা মেয়েকে দেখা হওয়া মাত্রই তাকে প্রেমের অফার দিয়ে বসছেন, এটা হচ্ছে ইভটিজিং। প্রেমে সফলতা আসবেনা।
কিন্তু এই প্রেম পেতে যদি নিচের স্টেপগুলো ফলো করেন, তাহলে সফল হবেন:
- একটা মেয়েকে প্রথমে যেকোন ভাবে ইমপ্রেসড করলেন
- এবার সেই মেয়ের সাথে নরমাল কানেকশন শুরু করলেন
- আরেকটু তার সাথে নিয়মিত বিভিন্ন কেয়ারিং করতে করতে সম্পর্কটাকে বন্ধুত্বে পরিণত করলেন
- আরও বেশি বেশি কেয়ারিং বাড়িয়ে দিলেন এবার। একটা পর্যায়ে প্রেমের অফার দিলেন।
এবার মেয়েটা এতদিনের জার্ণিতে আপনাকে ভালোভাবে চিনলো। সেজন্য আপনার প্রেমের প্রস্তাব তাকে ক্ষিপ্ত করেনি। সে প্রেমে রাজি হয়ে যাওয়ার পসিবিলিটি বেড়ে গেলো।
এই জার্ণিটাকেই বলে সেলস ফানেল।
সেলস ফানেল স্টেপ:
১) ১ম পরিচয়ে সেল করার প্রস্তাব না দিয়ে নিজের প্রতি ইমপ্রেসড করার মত কনটেন্ট তৈরি করুন।
২) এবার এই ইমপ্রেসড হওয়া ব্যক্তিকে আরও কনটেন্ট দেখিয়ে সম্পর্কটা গভীর করা, আস্থার সম্পর্ক তৈরি করা।
৩) এবার সেলস প্রস্তাব দেওয়ার মত কনটেনট্ তৈরি করা।
যেকোন প্রডাক্টের সেলস এর ক্ষেত্রে হুবহু এই স্টেপগুলো ফলো করে প্লান করে আগাতে হয়, তাহলেই সফলতার হার বেড়ে যায়। না হলে ইভটিজার হিসেবে আপনার ব্রান্ডের অ্যাড মানুষের মধ্যে বিরক্তির কারণ সৃস্টি করে, তাই তখন সেলস কমে যায়, অ্যাড কস্ট বেড়ে যায়।
অডিয়েন্সকে ইমপ্রেসড করা কনটেন্ট তৈরিটা মেইন ম্যাজিক। আর বিজনেসের জন্য এই ম্যাজিকটা শিখাটার জন্য কোটি টাকা ব্যয় হয়ে গেলেও লস নাই। পুরোটাই বেনিফিট।
কোটি টাকা না, মাত্র ৩৯৯ টাকাতে কনটেন্ট এর উপর আমার দুটো ইবুক রয়েছে।
১) Content Pedia,
২) Content Hacksওই দুটো বই পড়লে কনটেন্ট নিয়ে প্যারা হবেনা, কনটেন্ট এর ভুলগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
বই দুটোর নামের উপর ক্লিক করলেই অর্ডার লিংক পেয়ে যাবেন।
সেলস ফানেল ছাড়া কি মার্কেটিং করা সম্ভব নয়?
সব মেয়েতো আর ঘুরায় না। দুটো ভিন্ন ঘটনাও ঘটে।
১) একবার প্রস্তাব দিলেই কিছু মেয়েও আছে সাথে সাথে রাজি হয়ে যায়।
২) আবার কিছু মেয়েকে প্রস্তুাব কি দিবেন, সেই আপনাকে পেতে পিছনে পিছনে ঘুরবে।
এক্ষেত্রে সেলস ফানেল লাগেনি। কিন্তু এই ঘটনাগুলো অনেক কম ঘটে থাকে। যেটুকু ঘটে সেটার কারন হচ্ছে, ছেলে খুবই মাথা ঘুরানো সুন্দর, স্মার্ট সেজন্য হয়তো। একই ভাবে সেলসফানেল ছাড়াও সেলস আসবে, কিন্তু কম আসবে। তবে যেটুকু আসবে, সেটুকুর জন্য স্মার্ট পেইজ, গেটআপ, সেটআপ মাথানস্ট টাইপ হলে আসবে।
আশা করি, লাউড এন্ড ক্লিয়ার।
সেলস ফানেল বিষয়টা ক্লিয়ার হতে কোন প্রোডাক্টের উদাহরণ দিয়েই বুঝতে চাচ্ছেন তো, সেটাও পাবেন এই লিখাতে। পড়তে থাকুন।
বাজারে অডিয়েন্স ক্যাটাগরিটা বুঝুন:
যেকোনো কিছুর মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে মাথাতে রাখতে হবে। আপনার সম্ভাব্য বাজারে ৩ শ্রেণির সম্ভাব্য ক্রেতা রয়েছে।
১ম শ্রেণি : সেবা বা পণ্যটি লাগবেই। সে শুধু খুঁজতেছে, কে সেই সেবাটি সেল করে। কে সেল করে খুজে পেলেই তার কাছ থেকে পণ্যটি বা সার্ভিসটি কিনে নিতে প্রস্তুত। প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন তার চোখে পৌছাতে পারলেই নিশ্চিত সেল পেয়ে যাবেন।
বাজারে এ শ্রেণি সর্বোচ্চ ১০%
২য় শ্রেণি : এ ধরনের কিছু লাগবে। কিন্তু আসলে সে নিজে এখনও পুরোপুরি কনফার্ম না, আসলে সে কী খুঁজছে? সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন, লোভনীয় বিজ্ঞাপন এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যপারে আস্থা তৈরি করাতে পারলে এ শ্রেণিকে ক্রেতাতে রূপান্তর করা সম্ভব।
বাজারে এ শ্রেণি সর্বোচ্চ ৩০%
৩য় শ্রেণি : এ শ্রেণিতে ফেলব তিন ধরনের মানুষকে :
ক. যাদের এ সার্ভিস কিংবা পণ্য সম্পর্কে কোনো ধারণাই নাই।
খ. যারা সার্ভিসটি সম্পর্কে জানে কিন্তুএকবিন্দুও কেনার আগ্রহ নাই
গ. যাদের এ সার্ভিস বা প্রোডাক্টটি সম্পর্কে সম্পূর্ণ নেগেটিভ ধারণা রয়েছে।
এ শ্রেণির মানুষদের ক্রেতাতে রূপান্তরিত করতে অনেক পরিকল্পিত সেলস ফানেল ডিজাইন করতে হয়। সেলস ফানেল তৈরি ছাড়া এ শ্রেণির মানুষদের কখনও ক্রেতাতে কনভার্ট করতে পারবেন না।
বাজারে এ শ্রেণি ৬০%
যেকোনো মার্কেটিং প্ল্যানিংয়ের সময় উপরের রেসিওটা মনে রেখেই মার্কেটিং পরিকল্পনা সাজাতে হবে। কোনো শ্রেণিকে কীভাবে টাচ করবেন, সেই বিষয়ে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে। প্রত্যেক শ্রেণির জন্য আলাদা কনটেন্ট প্লানিং থাকতে হবে। তাহলেই সেল বৃদ্ধি পাবে।
এবার পণ্য বিক্রির জন্য সেলস ফানেল উদাহরন:
ধরি, আমি অর্গানিক ফুড নিয়ে বিজনেস করছি।
চিয়া সিড, সরিষা তেল, মধু।
ধরি, আমি এই প্রোডাক্টগুলো সেল করার সময় ওজন কমানোর পেইনপয়েন্টের সলিউশন হিসেবে সেলস অ্যাড তৈরি করবো।
এবার, আপনি যদি সেলস অ্যাড চালালেন, যে নতুন অডিয়েন্স, সে আমার ব্রান্ডের সাথে ১ম কমিউনিকেশনসটা হবে সেলসম্যান হিসেবে। অর্থাৎ আপনাকে সেলসম্যান হিসেবে চিনবে। ওই যে, ইভটিজার কারা হয়, মনে আছে, সেটাই ঘটবে এ ক্ষেত্রে। অন্য উদাহরণ দিয়েও বুঝাই, একজন সেলসম্যান যদি বলে এই শাড়িটা শুধু আপনার জন্যই আনা হয়েছে, আপনাকে ভালো মানাবে, এটা বললেও যেরকম দোকানদারকে বিশ্বাস করিনা, একইভাবে আপনি যখন সেলসম্যান হিসেবে বলবে, এই সরিষা তেল, এই ঘি, এই মধু, এই চিয়াসিড খেলে ওজন কমে যাবে, সেই কথাগুলোও মানুষের মনকে আকর্ষন করতে পারেনা, তাই মানুষ সেটার জন্য পকেট থেকে টাকা খরচ করতে চায়না।
তাহলে করনীয় কি?:
অডিয়েন্সের সাথে ১ম পরিচয়টা সেলসম্যান হিসেবে না, যে পেইনপয়েন্টের সলিউশন হিসেবে প্রোডাক্ট বিক্রির অ্যাড চালাবেন, সেই পেইনপয়েন্টের সলিউশনের জন্য একজন এক্সপার্ট হিসেবে ১ম পরিচয়টা হতে হবে।
অর্গানিক ফুড নিয়ে যেহেতু বলছিলাম। আপনি ১ম ৭০০ ডলার খরচ করবেন, ওজন কমানোর বিষয়ে এক্সপার্ট হিসেবে কনটেন্ট মেইক করে।
১ মাসে ৫ কেজি ওজন কমানোর ট্রিকস, ঘরে বসেই কিভাবে ওজন কমাবেন? কেন আপনার ওজন কমছেনা, এরকম টাইটেল দিয়ে কনটেন্ট মেইক করে, এই কনটেন্টগুলোতে অ্যাড বার্ণ করবেন। যারা এ ভিডিওগুলো দেখবে, তাদের মনে ওজন কমানোর বিষয়ে এক্সপার্ট হিসেবে জায়গা করে নিতে পারবেন, পজিটিভলি তারা ইমপ্রেসড হয়ে যাবে। এবার যাদেরকে ওজন কমানোর বিষয়ে এক্সপার্ট হিসেবে ইমপ্রেসড করতে পেরেছেন, শুধু তাদেরকেই ওজন কমাতে সরিষার তেল, ওজন কমাতে চিয়া সিড এ টাইপ অ্যাডগুলো দেখান, সে এবার দ্রুত কনভার্ট হবে। অ্যাড খরচ তখন কমে আসবে।
এবার আশা করছি, Everything is Loud and Clear
সেলস গ্রোথের জন্য প্রতিটা উদ্যোক্তার জন্য আমি মাস্ট মাস্ট সাজেশন দিয়ে থাকি, কনটেন্ট কিং এর Sales Growth Foundation কোর্সটি করার জন্য। রেকর্ডেড ভিডিও। প্রতিটা ভিডিও ২০ বার করে দেখা উচিত।
লিংক দিয়ে দিচ্ছি: https://www.contentkingbd.com/sales-growth-foundation/
কোন কোন ক্ষেত্রে সেলস ফানেল ছাড়াও মার্কেটিংয়ে সফল হওয়া সম্ভব:
- যেসব সার্ভিস বা প্রোডাক্টের জন্য খরচ করতে মানুষ খুব বেশি চিন্তা করে না, অর্থাৎ খুব সহজেই প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কিনতে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন, সেগুলোর ক্ষেত্রে সেলস ফানেল ছাড়াও সফল হওয়া যায়। যেমন : সিগারেট, টি-শার্ট, চাল, ডাল, কলম, ইত্যাদি বিভিন্ন দৈনন্দিন ব্যবহৃত জিনিস এবং কম দামি প্রোডাক্ট।
- সময়ের চাহিদাসম্পন্ন হলে সেক্ষেত্রে সেলস ফানেল দরকার হয় না। যেমন : আমার সিজনে আমের চাহিদা অনেক বেশি। তাহলে এটি বিক্রি করতে সেলস ফানেল ছাড়াও একটা ভালো সেল পেয়েও যেতে পারেন, যদিও কম্পিটিশন বেশি দেখে , সেলস ফানেল ছাড়া ততটা সফল হতে এখন কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়তে হয়।
- যে বাজারে বিক্রি করবেন, সেই বাজারে খুব জনপ্রিয় ব্রান্ড এটি। সেক্ষেত্রে সেলস ফানেল ছাড়াই ভালো বিক্রি হবে। অর্থাৎ আড়ং এর পণ্য বিক্রি করবেন। তাহলে শুধু টার্গেট ঠিক করে বুস্ট করলেই সেল পেয়ে যাবেন।
- একদম যারা ১০০% কিনবে, সেই লিস্ট কারও কাছ থেকে পেয়ে গেছেন, সেক্ষেত্রে সেলস ফানেল দরকার নাই।
এসব ক্ষেত্রে সেলস ফানেল ছাড়াও সফল হলেও বড় বড় মার্কেটাররা এসব ক্ষেত্রেও সেলস ফানেল তৈরি করেন। কারণ লংটাইম সফলভাবে কাজ করতে চাইলে সেলস ফানেল ডিজাইন করে কাজ করলে সফলতা অনেক বেশি পাওয়া যায়।
কোন কোন ক্ষেত্রে সেলস ফানেল ছাড়া মার্কেটিং করাই উচিত না?
- – কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্রান্ডিংয়ের জন্য মার্কেটিং করলে।
- – যেসব সেবা বা প্রোডাক্ট কেনার ব্যাপারে খুব সহজে কেউ সিদ্ধান্ত নেয় না।
- – যার কাছে বিক্রি করবেন, তার জন্য এটি যদি ব্যয়বহুল হয়ে থাকে।
- – যেটি জীবনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ না, পছন্দের কারণে কিনতে পারে।
- – একদমই নতুন প্রতিষ্ঠান হলে সেক্ষেত্রে সেই প্রতিষ্ঠানের সার্ভিস বা পণ্য বিক্রির মার্কেটিংয়ে
- – পণ্য বা সার্ভিসটির ব্যাপারে বাজারে নেগেটিভ ধারণা থাকলে, সেটির মার্কেটিংয়ে
- – যে বাজারে বিক্রি করবেন, সেখানে কম্পিটিশন খুব বেশি থাকলে
- – আপনার চাইতে কম মূল্যে অন্য কেউ বাজারে সেটি বিক্রি করে থাকলে।
প্রোডাক্টটি প্রিমিয়াম, সেরা এই একই টাইপ কনটেনট্ আইডিয়া নিয়ে ব্রেইন খাটানোর চিন্তা বাদ দিন। সেলস ফানেলের কোন স্তরে আছেন, সেটি বুঝে কনটেন্ট তৈরি করলেই শুধুমাত্র সফল হবেন। এটাই কনটেন্ট পরিকল্পনাতে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
যা কখনও ভুলে গেলেই বিপদ, সেটা হচ্ছে:
অডিয়েন্সের জন্য কনটেন্ট = Sales growth High
ফেসবুকের জন্য কনটেন্ট = Ads Cost High
অডিয়েন্সের জন্য কনটেন্ট তৈরিতে একটা ফ্রি ক্লাশ নিয়েছিলাম, সেটার লিংকটা দিয়ে শেষ করছি, ভিডিওটা দেখে, ভিডিওতে ক্লাশ থেকে কতটুকু বেনিফিটেড হতে পেরেছেন, সেটা জানানোর অনুরোধ রইলো। আর চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইভ করে রাখবেন, দূর্দান্ত কিছু ভিডিও আসবে সেখানে।