আমরা যেকোন একটা ব্রান্ডকে ব্রান্ডিং করার জন্য খুব পরিকল্পিত একটা প্লান করে, কনটেন্ট মার্কেটিং প্লান করি। তখন ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য কনটেন্ট ক্যালেন্ডার তৈরি করি।
এ ক্যালেন্ডার কিভাবে তৈরি করে সেটা দেখে নিন, কিন্তু এটার শেষে কেন এ কনটেন্ট ক্যালেন্ডারটা অনুসরণ করা উচিত সেটা লিখবো।
কনটেন্ট ক্যালেন্ডারের নির্দিষ্ট কখনও ফরম্যাট নাই। আপনি সপ্তাহে ৭দিনের কবে কখন কি পোস্ট করবেন, সেটার একটা রুটিন লিখে রাখবেন। ধরি আমি প্রতিদিন ৩টা করে পোস্ট করবো আমার পেইজে।
তাহলে রুটিনটা এরকম হতে পারে:
শনিবার:
সকাল পোস্ট: গতকালকের ডেলিভারী কিংবা প্রডাক্ট প্রস্তুতির কোন ছবি কিংবা ভিডিও ।
দুপুরের পোস্ট: কোন কুইজ কিংবা কোন প্রশ্ন।
রাতের পোস্ট: প্রোডাক্টের সেলস পোস্ট
রবিবার:
সকাল পোস্ট: পণ্য সম্পর্কিত কোন ক্লায়েন্টের ফিডব্যাক
দুপুরের পোস্ট: কোন রেসিপি পোস্ট
রাতের পোস্ট: নতুন পণ্য নিয়ে বিশেষ লাইভ।
এরকমভাবে ৭দিনের রুটিন রেডি থাকবে। এটাকেই বলা হয় কনটেন্ট ক্যালেন্ডার। গুগলের ইমেজ সার্চে গিয়ে কনটেন্ট ক্যালেন্ডার লিখে সার্চ দিলেই অনেকের ব্যবহৃত কোন ক্যালেন্ডার ফরম্যাট পেয়ে যাবেন।
এখনও যারা বসে আসেন, তাদের জন্য এবারের অংশটি লিখছি:
কনটেন্ট ক্যালেন্ডার কেন অনুসরণ করা প্রয়োজন:
- প্রতিদিন হঠাৎ করে পরিকল্পনা ছাড়া কোন কনটেন্ট পোস্ট হবে না।
- প্রতিদিনের কোন বেলাতে কনটেন্ট পোস্ট মিস যাওয়ার সুযোগ থাকবেনা
- সব সময় একই পোস্ট না হয়ে পেইজের অডিয়েন্স কনটেন্ট ভেরিয়েন্স দেখতে পাবে।
- অডিয়েন্সের মধ্যে একটা পযায়ে বিভিন্ন সময়ের পোস্টের জন্য প্রত্যাশা তৈরি হবে।
- কোন সময়ের এবং কোন ধরনের পোস্ট বেশি কাযকর হচ্ছে, সেটা অ্যানালাইস করা সহজ হবে।
- সবচাইতে বড় কথা, আপনার পেইজটাতে অনেক গোছানো একটা ফরম্যাট অডিয়েন্স খুজে পাবে যা ব্রান্ড ভ্যালু বাড়াতে অনেক সহায়ক হবে।
কনটেন্ট ক্যালেন্ডার পরিকল্পনার জন্য খুব সাধারণ একটি গাইডলাইন
খুব প্রাথমিক কিছু অ্যাকশন প্লানের আইডিয়া দিবো। কিন্তু কারও বিজনেসের পুরো পরিকল্পনা লিখে দেওয়া সম্ভব না।
কেন কারও পরিকল্পনা লিখে দেওয়া সম্ভব না?
- – পরিকল্পনা করার সময় আপনার কি কি ক্ষমতা আছে,সেটা শুধু আপনি জানেন।
- – আপনার কাজের ম্যানপাওয়ার কতজন কাজে লাগাতে পারবেন, সেটাও আপনার জানা।
- – আপনার সময় কতক্ষণ আছে, কোন টাইমে আপনার সময়, সেটাও আপনি জানেন।
উপরের ৩টা বিষয়কে মাথাতে রেখে পরিকল্পনা করতে হয়।
আপনারা কি কি কাজ জানেন, সেটা ভালো করে জানেন। সেটা নিয়ে এবার পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলেন।
কনটেন্ট পরিকল্পনাতে কিছু পরিকল্পনা রাখবেন, যেগুলো শেয়্যারেবল টপিকস, কিছু প্রোডাক্ট রিলেটেড।
শেয়ারেবল টপিকস:
– সকালটা একটা কোরআনের বানী দিয়ে শুরু হবে।
– সমসাময়িক জনপ্রিয় লোকদের বানী নিয়ে ইমেজ।
– যেকোন টপিকসে শিক্ষনীয় সিরিজ।
– কোন মজার কিংবা শিক্ষনীয় ভিডিও ফুটেজ
– কি করবেন, কি করবেন না এ নিয়ে যে পোস্ট শিখেছিলেন, তার সিরিজ।
ইত্যাদি, আর বাকি মনে আসছে না।
প্রোডাক্ট রিলেটেড কনটেন্ট:
– সেলস পোস্ট
– প্রোডাক্ট ম্যানুফেকচারিং শর্ট ভিডিও বা ইমেজ
– প্রোডাক্টের কিংবা বিজনেসের পিছনের গল্প
– প্রোডাক্ট নিয়ে রিভিউ, শুধু রিভিউয়ের উপর অনেক বৈচিত্র হতে পারে।
এবার আপনি কি কি এতদিন শিখছেন, সেই সবের উপর ভিত্তি করে প্রতিদিন ৫টা করে আপনার সময়মত কনটেন্ট আইডিয়া রেডি করেন।
কিছু কনটেন্ট যাবে প্রতিদিনই । আবার কিছু যাবে সপ্তাহে ২/৩ দিন। সো এরকমভাবে কনটেন্ট প্লানটা করে ফেলেন। তাহলে হঠাৎ করে কোন একটা কনটেন্ট আসবে এরকম ঘটবেনা, consistency থাকবে।
কোথায় কোথায় থেকে লিড যোগাড় করবেন?
কোন কোন গ্রপে পোস্ট করবেন, সেটা এবার ঠিক করেন। কিছু গ্রপে আপনার বিজনেসকে প্রোমোট করবেন। ২টা গ্রপ রাখেন যেখানে আপনাকে প্রোমোট করবেন শুধু। বিজনেসকে প্রোমোট করার সুযোগ পাবেন না। বিভিন্ন গ্রপে যদি নিয়মিত মিনিমাম ২টা করে পোস্ট না করেন, তাহলে আপনার বিজনেসগ্রোথ কমে যাবে। কারন লিড আসার পথ বন্ধ হয়ে যাবে।
এবার পেইজের জন্য যে কনটেন্টগুলো রেডি হচ্ছে, সেগুলোর কিছু যাবে বিজনেস প্রমোট করার গ্রপে, কিছু যাবে আপনাকে প্রমোট করার গ্রপে।
ধরেন যে, আপনি বাচ্চাদের নিয়ে ৫০টার উপর বিভিন্ন সিরিজের কনটেন্ট বানাবেন। তাহলে সেখানে হয়ত আপনার বিজনেসের নামটাই ব্যবহার করবেন না। আপনার নামটা শুধু গেলেই হবে। শিশু বিষয়ক গ্রপগুলোতে সেগুলো পোস্ট করতে থাকবেন। তাহলে অনেকেই আপনার সাথে কানেক্টেড হবে।
মনে রাখবেন, কোন একটা বিষয়ে একটা পোস্ট করলে সেটা কোন ভ্যালু ক্রিয়েট করেনা, তাই একই টপিকসের মিনিমাম ১৫–২০টা পোস্ট করতে বলি। তাহলে একটা পযায়ে সেই টপিকসের পোস্ট আপনার একটা ভ্যালু ক্রিয়েট করে দেয়।
এই একই পোস্টগুলোও বিজনেস রিলেটেড গ্রপগুলোতেও পোস্টকরার সুযোগ থাকলে সেখানে বিজনেস লোগো সহ পোস্ট করবেন।
এবার জাস্ট রুটিনটা রেডি করে ফেলেন। তারপর সেই রুটিন অনুযায়ি কাজ করেন, তাহলেই কাজে রেজাল্ট পাবেন।
ফলাফল কি পাবেন, আশা করছেন?
- – আপনার ব্যপারে মানুষজনের আগ্রহ বাড়বে। মানুষজন আপনার পোস্টের জন্য অপেক্ষা করবে।
- – অনেকেই আপনার কমেন্টে আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু জানতে চাইবে।
- – অনেকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট দিবে।
- – একটা পযায়ে অনেকে আপনাকে ট্যাগ করে পোস্ট করা শুরু করবে।
এই ফলাফলগুলো আশা শুরু করলে বুঝবেন, ঠিকমত কাজ হচ্ছে।
খুব সংক্ষিপ্তভাবে কিছু আইডিয়া দিলাম। আপনাদের বিজনেস অনুযায়ি এবার আপনার কনটেন্ট ক্যালেন্ডার রেডি করেন।